Ami Tarashis Bolchi

Ami Tarashis Bolchi
The blog of Tarashis Gangopadhyay (click the photo to reach our website)

Thursday 30 July 2015

গুরুপুর্নিমা

      আজ গুরুপুর্নিমা। আমাদের গুরুকে সম্মান জানানোর জন্যে নির্দিষ্ট দিন। গুরু কে ?গুরু কে ভাগ করলে পাওয়া যাবে গু এবং রু। এর মধ্যে গু শব্দের অর্থ অজ্ঞানের অন্ধকার যার মধ্যে ডুবে আছে জীবজগত আর রু শব্দের অর্থ আলো। অর্থাত যিনি আমাদের ভিতরকার অজ্ঞানের অন্ধকার দূর করে আলোর পথে নিয়ে যান তিনিই গুরু। যিনি আমাদের হাত ধরে জীবন  মহাজীবনের পথে নিয়ে যান তিনিই গুরু। এই পূর্নিমায় তাকেই আমরা জানাই আমাদের শ্রদ্ধা।
     এই পূর্নিমার এহেন নামকরণের কারণ -এটি ব্যাসদেবের আবির্ভাব তিথি। ব্যাসদেব যে ভাগবত, গীতা সহ  বহু মহাগ্রন্থের মাধ্যমে আমাদের হিন্দু ধর্মকে দেখিয়েছেন দিশা আর তাই তাঁকেই আমরা মানি প্রথম ধর্মগুরু রূপে।  এটি  তাঁর আবির্ভাব তিথি। তাই এই তিথিতে আমরা সেই আদি গুরুকে শ্রদ্ধা জানাই। আর তাঁর মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাই  আমাদের জীবনে যিনি মুক্তির কান্ডারী হয়ে এসেছেন সেই গুরুকে।
      আজ গুরুপুর্নিমা উপলক্ষ্যে আমি প্রনাম জানাই আমার শক্তিমন্ত্রের  মন্ত্রগুরু তথা ক্রিয়াগুরু বাবাকে,কৃষ্ণ মন্ত্রের গুরু মাকে,অধ্যাত্ম পথে যেসব মহাত্মাদের কৃপায় সিঞ্চিত হয়েছি আমি সেই মহাত্মাদের এবং যেসব অধ্যাত্ম গ্রন্থের মাধ্যমে নিজেকে পরিশীলিত করতে পেরেছি সেই অধ্যাত্ম বই এর লেখকদের। এদের সবার থেকেই আমি শিখেছি মহাজীবনের পথ চলার সূত্র। তাই এঁরা সবাই আমার গুরু। এদের সবাইকেই আমার প্রণিপাত।
      সেইসাথে দেশ বিদেশে আমার যারা শিষ্য শিষ্য আছ, তোমাদের সবাই আমার নিও আমার প্রাণভরা ভালবাসা,স্নেহ,শুভেচ্ছা ,প্রীতি ও আশির্বাদ।  ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করি - তিনি তোমাদের সবার সার্বিক মঙ্গল করুন। সার্থক হোক তোমাদের পথ চলা মহাজীবনের লক্ষ্যে। 

Monday 20 July 2015

চিরন্তন সৌন্দর্য



আমরা সাধারণত সুন্দর মুখ,সুন্দর দেহ গড়ে তুলতে চাই । যাতে সেই বহিরঙ্গের সুন্দরকেই অন্যেরা ভালোবেসে ফেলে । কিন্তু সেই সুন্দর তো ক্ষণস্থায়ী। ঠিক ফুলের সৌন্দর্যের মত। আজ আছে কাল থাকবে না। তার পরিবর্তে আমাদের চেষ্টা করা উচিত নিজেকে গড়ে তোলার - যাতে আমাদের আত্মিক সৌন্দর্যকে আমরা প্রকাশ করতে পারি - আমাদের ভিতরে যদি সততা,নিঃস্বার্থ ভালবাসা,প্রেম,মৈত্রী,স্নেহ জাগ্রত হয় এবং আমাদের ভিতরের ক্রোধ,ঈর্ষা,হিংসা,প্রতিহিংসা,লোভ,লালসা যদি আমরা ধংস করতে পারি তবেই তো আমরা সত্যিকারের সুন্দর হতে পারব। সেই সৌন্দর্য চিরকাল রেখাপাত করবে সবার মনে। ছুয়ে যাবে সবার মন। দেহে সুন্দর হওয়ার পরিবর্তে মনে সুন্দর হওয়া প্রয়োজন। সেই সৌন্দর্যই চিরন্তন - দেহের সৌন্দর্য ক্ষনিকের মরিচিকা মাত্র।   

Sunday 12 July 2015

"রূপং দেহী,জয়ং দেহী,যশঃ দেহী , দ্বিষঃ দেহী "

সামনে আসছে মা দুর্গার পূজা। হবে দেবীবরণ। আমরা মাকে বলব -"রূপং দেহী,জয়ং  দেহী,যশঃ দেহী , দ্বিষঃ দেহী "- সবাই ভাবেন এর অর্থ -মায়ের কাছে আমরা চাইছি - মা,রূপ দাও, জয় দাও,যশ দাও, আমাকে শত্রু সংহারে সমর্থ কর। আমরা জাগতিক জগতের মানুষ। তাই জাগতিক অর্থই ভাবি।
          কিন্তু এই শ্লোকের আলাদা আধ্যাত্মিক তাত্পর্য আছে। এখানে 'রূপং দেহী' বলতে বোঝানো হচ্ছে  - ' মা,আমাকে পরমাত্মবস্তু দাও। '  
শাস্ত্র বলছে রূপ সম্বন্ধে -"রূপং রূপাতে জ্ঞায়তে ইতি রূপং পরমাত্মবস্তু"। 
       'জয়ং  দেহী' বলতে বোঝানো হচ্ছে - 'মা,আমাকে পরমাত্মের স্বরুপতত্ব অবগত করাও।' 
শাস্ত্র বলছে জয় সম্বন্ধে -" জয়ং জয়্তানেন পরমাত্মনো স্বরূপমিতি জয়ঃ।"
     'যশঃ দেহী' বলতে বোঝানো হচ্ছে -'মা,আমার তত্বজ্ঞান সম্পাদন কর।' 
শাস্ত্র বলছে যশ সম্বন্ধে -"সহ নৌ যশঃ ইতি শ্রুতিপ্রসিদ্ধঙ  তত্বজ্ঞানসম্পাদনজন্যং জসস্তদ্দেহী।"

   ' দ্বিষঃ দেহী' বলতে বোঝানো হচ্ছে - 'মা, আমার কম,ক্রোধ ইত্যাদি শত্রুর সংহার কর। '
 শাস্ত্র বলছে  দ্বিষ সম্বন্ধে - "দ্বিষঃ জহী কম ক্রোধাদিন সত্রুন জহী নাশয়ঃ। "
    এই শ্লোকের এই আধ্যাত্মিক অর্থ জেনে মন্ত্র পথ করলে তবেই এই আধ্যাত্মিক ফল লাভ হয় - এমনটাই শাস্ত্র বলে থাকে। তাই আসন্ন পূজায় এই অর্থ মনে রেখেই যেন আমরা মায়ের স্তোত্র পাঠ করি। 

Friday 10 July 2015

ইস্ট সাক্ষাতকার

অনেক ভক্তই  আমাকে বলে - কবে তার ইস্ট দর্শন হবে ? কিন্তু এই ইস্ট দর্শন তো নতুন কিছু নয় যা সাধনার মাধ্যমে আয়ত্ত্ব হবে। তাই আমি বলি - ইস্ট তো তোমার মাঝেই আছেন। তার সাক্ষাত করা নতুন কিছু নয়। শুধু তুমি তাকে দেখতে পাচ্ছ  না নিজের অহংকার বা egoর জন্যে। এই ego হল একটি মায়ার পর্দা যা জীবকে দুরে রাখে ইষ্টের থেকে। সাধনার মাধ্যমে সেই egoর পর্দা  সরানোই  শুধু আমাদের কাজ । প্রতি জন্মে যা আসে আর যায় তা হল এই আমি-র আবরণ। সাধনার মাধ্যমে এটিকে সরিয়ে দিতে পারলেই মিলবে ইস্ট সাক্ষাতকার। ঘটবে জীবাত্মা ও পরমাত্মার মিলন। 

Thursday 2 July 2015

ভক্ত হতে গেলে





অহংকার বা ইগো হল ভক্তিলাভের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। কারণ অহংকার যোগায় আমার আমার ভাব। আমার আমার ভাব থেকে আসে কামনা - সবকিছুই তখন আমার নিজের রূপে পেতে চাই। সেই কামনায় বাধা পড়লে আসে ক্রোধ। ক্রোধ আনে প্রতিহিংসা। আর এসব মিলিয়েই  মানুষ জড়িয়ে যায় মায়ার জালে। তাই ভক্ত হতে গেলে আগে নিজের আমিত্ব নাশ কর। মনকে বোঝাও ঈশ্বরের মহান কর্মযজ্ঞে আমি একটি বোরে মাত্র - যার নিজস্ব বলতে কিছুই নেই ,উপরওলা যেমন চালাবেন আমাকে তেমনিই চলতে হবে। সেই ভাব মনে রেখে সব ঈশ্বরের কাজ ভেবে কর। দেখবে তোমায় আর কোনো কাজ করতে হবেনা - তোমার কাজ হয়ে দাঁড়াবে তোমার সেবা।