Ami Tarashis Bolchi

Ami Tarashis Bolchi
The blog of Tarashis Gangopadhyay (click the photo to reach our website)

Friday 31 January 2014

সাধনপথে চলতে হলে ২

     সাধনপথে চলতে হলে ২

         তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় 

অনেকেই আমাকে বলে -  সংসারের সব কাজ সেরে কাজ সেরে আর সময় পাইনা ঠাকুরকে ডাকার।উত্তরে আমি বলি - সংসারের সব কাজের জন্যে সময় মিলছে অথচ সেই কাজের কোনো ফল সঙ্গে যাবেনা আর এটা জেনেও যে কাজের ফল সঙ্গে যাবে তার জন্যে সময় নেই ? আমি জোর দিয়ে বলি - যেমন করে হোক,যেভাবে হোক জপ করবে। ২৪ ঘন্টায় অন্তত ৯০ মিনিট  জপের জন্যে দাও। তাও না পারলে অন্তত এক ঘন্টা।ধর তোমার কোনো প্রিয়জন বিদেশে আছে,সেক্ষেত্রে কি হয়,সব কাজ করলেও মনটা পড়ে থাকে তার কাছে। ভগবানকেও সেভাবে ভাবতে হয়। সেইসাথে প্রতিদিন শোবার  সময়ে নিজের সারাদিনের সব কাজ -ভালো মন্দ সমর্পণ করবে ঠাকুরকে আর বলবে আমার সব তুমি নাও আর সব নিয়ে আমাকে তোমার করে নাও। সেইসাথে শ্বাসে শ্বাসে নাম জপ বা যারা বীজমন্ত্র পেয়েছ জপ করে যাও। ব্যাস,তাতেই হবে। নাম নামী যে অভেদ। এটুকু করলেই তাঁর কৃপা অন্তরে পাবে। আর কিছু না পড়েও জ্ঞান জেগে উঠবে অন্তরে আপনা থেকেই। 
  

Thursday 30 January 2014

সাধনপথে চলতে হলে

                           সাধনপথে চলতে হলে

 আমার কাছে এসে অনেকেই দীক্ষা চায়।কিন্তু আমি তাদের বলি  -  সাধনপথে চলতে হলে প্রথমেই দীক্ষা হবে না। আগে দীক্ষার জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। নিজেকে তৃনাদপি ক্ষুদ্র মনে করতে হবে। মনকে  ইচ্ছাশুন্য করতে হবে এবং অহংকার  হবে। মনে কোনকিছু নিয়ে  তামাশা বা অলৌকিকের magic দেখার বাসনা থেকে নিবৃত্ত করতে হবে। সেইসাথে শাস্ত্রপাঠ ,সত গ্রন্থ পাঠ , সত্সংগ করে যেতে হবে যত সম্ভব। ধরা যাক - মনে কোন কিছুর উপর লোভ এলো। হয়ত ইচ্ছা জাগলো - এখন কিছু রসনার তৃপ্তির জন্যে খেতে হবে। তখনই চেষ্টা করবে লোভ সামলানোর।খাও পরিমিত। কথা বল কম। যেটুকু বল সত্যি বল। মনে কিছু নিয়ে জল্পনা কল্পনা কোর না।  আর কখনই মনে করবে না তোমার কিছু দরকার কারণ তোমার যা দরকার তা তোমার চেয়ে বেশি ভালো জানেন ঠাকুর। তিনিই ব্যবস্থা করবেন। 
   এই জায়গা গুলো আয়ত্ত করার  জন্যে নাম জপ খুব কাজে দেয়। তাই আমি তাদের বলি -রাতে নির্জন ঘরে বা ঘরের নিরালা কোণে নিজের পছন্দের ইষ্টনাম অন্তত এক বছর জপ কর। সেইসাথে রাত চারটায় উঠে পারলে স্নান করে আর নাহলে শয্যাশুদ্ধি করে অন্তত এক বছর জপ কর। যখন এভাবে জপ করতে করতে মন স্থির হয়ে আসবে তখন শ্বাস কুম্ভক করে চোখ বন্ধ রেখে ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করে তার মাঝে মন নিবিষ্ট করে জপ কর। তারপর শুধু তাঁর শ্রীচরণ  দেখে মন্ত্র জপ কর। তাতেই সব হবে। মাঝে মাঝে নিস্তব্ধ রাতে জপের পর ভ্রামরী প্রাণায়াম করে কানে আঙ্গুল দিয়ে শুনতে পারো  - তাতে ঝিল্লি,বাঁশী ,মেঘগর্জন,ঘন্টা,কাঁসা,ভেরী,তুরী এরকম নাদ  শুনতে পাবে। তারপর বীজমন্ত্র পেলে সহজেই কাজ দেবে।সেইসময়ে শুধু চেষ্টা করতে হবে মন যাতে আজ্ঞাচক্রে বা তার উপরে থাকে। এভাবে যোগে বসে জিভকে তালু মূলে রেখে বীজমন্ত্র জপ করলে প্রথমে  শোনা যাবে প্রণব ধ্বনি আর তাতে মন নিবিষ্ট করতে পারলেই আসবে সমাধী। 

Thursday 16 January 2014

আমার "কেদারনাথে আজো ঘটে অঘটন" গ্রন্থ সম্পর্কে আমার কয়েকজন বিশিষ্ট পাঠক পাঠিকার বক্তব্য - Facebookএ।

আমার "কেদারনাথে আজো ঘটে অঘটন" গ্রন্থ সম্পর্কে আমার কয়েকজন বিশিষ্ট পাঠক পাঠিকার বক্তব্য -  Facebookএ।   





Wednesday 1 January 2014

ধ্যান

                            ধ্যান 

   ধ্যান কাকে বলে? নিজের সত্বায় ফিরে যাওয়ার উপায় হল ধ্যান। আমাদের আসল সত্বা অসীম অনন্তর অংশ। তাকে নিজের মধ্যে অনুভব করাই ধ্যান।
একটি সহজ উপায় বলি ধ্যানের জন্যে। প্রথমে একটি কম্বলের আসনে বস। মেরুদন্ড সোজা করে। হাত রাখো চিনমুদ্রায়।
দু চোখ বন্ধ কর। নিজেকে প্রথমে মনিপুর চক্রে নাভিতে কল্পনা কর। নিজের চারপাশে যে মাংসের শরীর আছে তা ভিতর থেকে কল্পনা কর। দেখো মাথার শিরোভাগে আছে মস্তিস্ক। আর পিছন দিকে আছে মেরূদণ্ডের অস্থিসন্ধি। ধড়-এর মধ্যে আছে হৃদযন্ত্র,যকৃত,পাকস্থলী প্রভৃতি। তার মাঝের যে শুন্য অংশ সেখানে অনুভব কর নিজের সুক্ষ্ম শরীর।তার মধ্যে দিয়ে একটি milky way বা আলোর পথ উঠে গেছে উপরপানে। দেখতে থাক মনের চোখে এর মধ্যেই আছে সৌর বিশ্ব।এর মধ্যে তোমার চোখ দুটি যেন সূর্য,চন্দ্র। উপলব্ধি কর সব প্রাণীর প্রতি ভালবাসা তোমার হৃদয়ে। নিজের দেহের cell গুলো অনুভব কর নদীর মত,তোমার ত্বক যেন আকাশ,দেহের হাড় যেন পাহাড়। নিজেকে বল - তোমার মন হল সকল প্রাণীর মনের মিলনস্থল ,তোমার হৃদয় সকল প্রাণীর হৃদয়ের মিলনস্থল এবং তোমার ভালবাসা সকল প্রাণীর ভালবাসার মূর্ত রূপ। তারপর শুরু কর মনের উড়ান। চোখ বন্ধ করে কল্পনা করতে থাক যেন তুমি উড়ে যাচ্ছ অনন্ত মহাশুন্যের মধ্য দিয়ে। মনের চোখে দেখতে থাক - তোমার মধ্যেই আছে সমস্ত সৌরবিস্ব,সূর্য চন্দ্র,গ্রহ তারা।

এবার নিজেকে অনুভব কর অনাহত চক্রে আসন পেতে বসে আছ তুমি আত্মা। তোমার সামনে আকাশের একটা আবছা আবরণ। তার মধ্য দিয়ে একটি সোনালী রঙের সুড়ঙ্গ চলে গেছে সামনের দিকে - প্রশস্ত এই সুড়ঙ্গ। তার মধ্যে দিয়ে উড়ে যাও তুমি উপরপানে দুরে - আরও দুরে। অনেকটা দূর যাবার পর দেখবে এই হলুদ  সুড়ঙ্গ যেখানে শেষ হচ্ছে সেখান থেকে একটি নীল সুড়ঙ্গ এগিয়ে গেছে সামনের দিকে। এটি আগেরটির আয়তনে অর্ধেক। এর মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাও আরও হাজার হাজার মাইল। যেখানে এই নীল সুড়ঙ্গ শেষ হচ্ছে সেখানে দেখবে একটি বিরাট রুপোর দ্বার। সেটি বন্ধ। তার সামনে গিয়ে নিজের ইস্ট দেবতার কাছে প্রার্থনা করবে - ঠাকুর আমাকে তোমার কোলে টেনে নাও। আমাকে অনুভব করাও  আমার আমিকে। এই পর্যন্ত বলে বল ঠাকুর শরণাগত। তারপর অনুভব কর এই দ্বার খুলে যাচ্ছে আর তুমি দ্বারের মধ্য দিয়ে এসে পরেছ অসীম অনন্ত জ্যোতির মাঝে। এই জ্যোতির মাঝেই ডুবে থাক যত ক্ষণ মন চায়। যখন ফেরার প্রয়োজন হবে তখন "ঠাকুর আমি এবার আসি" বলে সেই রুপোর দরজার মধ্যে দিয়ে প্রথমে নীল সুড়ঙ্গ ও তারপর সোনালী সুড়ঙ্গ কল্পনা করে তার মধ্যে দিয়ে ফিরে এস অনাহত চক্রে। তারপর চোখ খুল। প্রতিদিন রাতে ঘুমনোর আগে বিছানায় বসে ১০ মিনিট এই ধ্যান করার চেষ্টা কর। দেখবে জীবনে এক নতুন আনন্দ অনুভব করবে। আজ ২০১৪ সালের প্রথম দিন আমার "শরণাগত
সম্প্রদায়"এর ভক্তদের জন্যে দিলাম এই ধ্যানের পাঠ। সবার মঙ্গল হোক।