Ami Tarashis Bolchi

Ami Tarashis Bolchi
The blog of Tarashis Gangopadhyay (click the photo to reach our website)

Thursday 18 July 2013

অহং থেকে মুক্তির পথ

            

             অহং থেকে মুক্তির পথ 

আমরা অনেক সময়েই ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি - আমাদের অহংকে দুরে সরিয়ে দাও। কিন্তু সাধারণ মানুষকে অহং থেকে মুক্তি একমাত্র দিতে পারে মৃত্যু।মৃত্যুর পরই যে কেটে যায় মায়ার বন্ধন।কিন্তু জীবিত অবস্থায় যদি অহং থেকে মুক্তি চাই তবে আমাদের নিজেদের চেষ্টা করতে হবে। কারণ এই অহংকার ঈশ্বরের সৃষ্টি নয়।এর স্রষ্টা স্বয়ং আমরা। এই মান ও হুঁশ যুক্ত মানুষ। যখন আমাদের মধ্যে ধর্মপরায়ণতা,দয়া,মায়া,ভালবাসা,স্নেহ,প্রেম,জ্ঞান ইত্যাদির থেকে মন সরে যায় এবং আমরা অন্তরের সৌন্দর্যের পরিবর্তে  বহিরঙ্গের সৌন্দর্যকে নিয়ে মেতে থাকি তখনই আমাদের পথ ভুল হয়। যতক্ষণ আমরা এই বহিরঙ্গের নশ্বর বস্তুর মধ্যে নিজেদের সুখ খুঁজতে থাকব ততক্ষণ আমাদের কাছে ধরা দেবে শুধুই অসুখ। ফলে ভিতরে পুষ্ট হতে থাকবে আমাদের অসন্তোষ। আর সেই অসন্তোষ থেকে যতই বেরিয়ে আসার চেষ্টা করব আমরা বাইরের পথে ততই ক্রোধ,অবিবেক প্রভৃতি অসুর উত্পন্ন হতে থাকবে আমাদের ভিতরে অহংকারের সঙ্গী হিসেবে। কারণ বাইরের  জগতে যা আছে সবই নশ্বর।  তাই এর থেকে মুক্তি পেতে হলে ডুব দিতে হবে নিজের মনের ভিতরে।নিতে হবে যোগের পথ।তা ছাড়া আমাদের তৈরী এই দানবের হাত থেকে পরিত্রাণের কোন পথ নেই।

Tuesday 16 July 2013

আশা

                                                      আশা 
মানুষের জীবনে যাবতীয় অশান্তির মূল কারণ আশা। আশা আছে বলেই জাগে পাওয়ার ইচ্ছা।আর পাওয়ার ইচ্ছা থেকেই আসে হারানোর ভয়।মানুষ যখন কোনো কাজ করে সে আবার ফিরে পেতে চায় অন্যের থেকে তার প্রতিদান।সবসময়ে সে যে তা পায় এমন নয়।এর ফলে তখন তার মনে আসে অশান্তি।অর্থাত কিনা - ছায়ার মধ্যেই আছে গলদ। আমরা  যদি এই চাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারি তবেই আমাদের মধ্যে থেকে যাবে হারানোর ভয়।আছে যত টেনশন সব নিতে যাবে পেনশন।ভেবে দেখতে গেলে - আমরা চাই কেন? যা আমাদের ভাগ্যে আছে তা তো এমনিতেই পাব।আর যা ভাগ্যে নেই তা কখনই পাবনা। তবে কেন এত চাওয়া?কেন এত ফিরে পাওয়ার আশা? এখানে আমরা কর্ম করতে এসেছি,সেটি করে যাব।যা ফল পাওয়ার চাইলেও পাব,না চাইলেও পাব।তাই চাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন।পাওয়ার পালা আপনা থেকেই শুরু হয়ে যাবে।আর মন ভরে থাকবে শান্তিতে।

Monday 15 July 2013

আসক্তি

                                       আসক্তি 

    আসক্তি হল যন্ত্রণার মূল কারণ। আবেগের যন্ত্রণা,রাগ,ভয়,হতাশা,অসুখ সব আসে আসক্তি থেকে। যে বস্তু পরিবর্তনশীল তার উপর আসক্তি এলেই আসে যন্ত্রণা।এটাই স্বাভাবিক। এই পৃথিবীতে সবই পরিবর্তনশীল।প্রকৃতি পরিবর্তনশীল।মানুষ পরিবর্তনশীল।যদি কখনো তোমরা নিজের ফেলে আসা দিনগুলির ছবি নিয়ে বস,দেখবে তোমরাও এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই চলেছ। বিগত দিনে তোমাদের কত আপনজন ছিল যারা আজকে সময়ের সাথে সাথে অনেক দূর হয়ে গেছে।আবার আজকে যারা তোমার কাছে আছে একদিন হয়ত এই সুত্র ধরেই তারাও চলে যাবে দুরে। ঋণানুবন্ধ শেষ হলেই সব শেষ। তাই আসক্তিতে নিজেকে বাঁধলেই যন্ত্রণা। 

এর থেকে বাঁচার উপায় কি জানো ?অতীতকে দেখো ইতিহাস হিসেবে।যাকে তুমি পাল্টাতে পারবেনা কিন্তু তার থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এগোতে পারবে।আর ভবিষ্যতকে দেখো এক রহস্যময় কাহিনী হিসেবে যেখানে ইশ্বরের আশির্বাদ ছাড়া একটুও এগোনো যাবে না।এতে তুমি পরিকল্পনা অবশ্যই করতে পারো কিন্তু সেটা বাস্তবায়িত হবে কিনা তা ঠিক করবেন ঠাকুর। তাই অতীত ভবিষ্যত নিয়ে না ভেবে বর্তমানকে মেনে নাও ঠাকুরের উপহার হিসেবে। নিজেকে অতীতের স্মৃতি আর ভবিষ্যতের জল্পনা থেকে যথা সম্ভব সরিয়ে নাও। বর্তমানটুকুই ঠাকুর তোমার হাতে দিয়েছেন।তাই শুধু তাকে নিয়ে থাকলেই চারপাশের চাপ ও যন্ত্রণা কাটিয়ে উঠবে।আবেগের যন্ত্রনাও সইতে হবে কম।

নিজেকে বর্তমানে রাখার একটি সরল উপায় বলছি।সুখাসনে বসে নিজের বুড়ো আঙ্গুল আর তর্জনী একসাথে কর।তারপর চোখ বন্ধ করে গভীর স্বাস নাও।তারপর খুব ধীরে ধীরে সেই স্বাস ছেড়ে দাও - এই ছাড়ার সময়ে চেষ্টা কর ১০ থেকে ২০ গুনতে।প্রায় মিনিট পাঁচেক ধরে এমনটি করলে দেখবে মন অনেক শান্ত হয়ে এসেছে।তখন স্থির হয়ে বসলে শুনতে পাবে তোমার নিজের শ্বাসের শব্দ। নিজের নিশ্বাসের এই শব্দই হলো তোমার আত্মার স্বর।সেই স্বর যখনি জাগবে তোমার মধ্যে তখনি শুরু হবে আসক্তিকে কাটিয়ে ওঠার পালা।

Tuesday 9 July 2013

রথযাত্রা

                               রথযাত্রা

আজ রথযাত্রা। জগতের নাথ জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। এই উপলক্ষ্যে জগন্নাথ মহাপ্রভু আজ আসবেন সকলের মাঝে। সকল সম্প্রদায়ের সকল ভক্তের সাথে আজ তাঁর রথে বিহার। এই রথে ভক্তদের সাথে শুধু যে স্বয়ং মহাপ্রভু জগন্নাথ থাকেন তাই নয়্সাথে থাকেন মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব জ্যোতির্ময় শরীরে,থাকেন তাঁর সকল পার্ষদ।তাই রথযাত্রা আধ্যাত্মিক পথের এক শ্রেষ্ঠ উত্সব।আমাদের উচিত - এই শরীর রূপ রথের সকল ভার মহাপ্রভুর কাছে সমর্পণ করে দিয়ে শরণাগত হয়ে এগিয়ে চলা এবং সকল কর্ম তাঁর কর্ম মনে করে নিস্পৃহ ভাবে থাকা ফলের আশা না করে।তবেই তো সার্থক হবে জীবনের রথযাত্রা। আজ রথ উপলক্ষে সবাইকে জানাই আমার শুভেচ্ছা ,আর সেইসাথে কনিষ্ঠদের জন্যে স্নেহ ও ভালবাসা।সবাই ভালো থেক এবং জীবনের রথকে এগিয়ে নিয়ে যেও।জয় জগন্নাথ।

Monday 8 July 2013

জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রহসন

                         জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রহসন
মহাকালের স্রোত চলেছে বয়ে। তারই ফলে গড়ে উঠছে নদীর এক পাড় ,ভাঙছে আরেক পাড়। ভাঙছে পুরনো ইমারত,গড়ে উঠছে নতুন।সবই ক্ষণস্থায়ী,আজ আছে,কাল নেই।কাল যারা ছিল সাথে,আজ তারা অনেকেই নেই,আজ যারা সাথে আছে কাল তারা অনেকেই থাকবেনা।এটাই জীবন।তবু আমরা এই ক্ষণস্থায়ী খড়কুটো আঁকড়ে থাকতে চাই।জানি কিছুই থাকবেনা,আমরাও থাকবনা।তবু সবই আঁকড়ে থাকি।জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রহসন।

Thursday 4 July 2013

পরিবর্তন

                                      পরিবর্তন 
   আমাদের জীবনে কত কিছু ঘটে যায় অহরহ। সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায় পরিবেশ।পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয় প্রতিটি মানুষকেই।তা সে ভালোমনেই মানুক বা বিরক্ত হয়েই।এই পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার নামই বহিরঙ্গের জীবন।
   আমাদের দেহেরই কত পরিবর্তন হয়।একদিন আমি ছিলাম শিশু।ধীরে ধীরে হয়েছি বালক,তরুণ,কিশোর।বর্তমানে আমি যুবক।এরপর হব প্রৌড়। আসবে বার্ধক্য।অবশেষে ঝরে যাব একদিন শীতের পাতাঝরা গাছের মত। এটাই জীবন।এর প্রতিটি অবস্থাকেই মেনে নিতে হয়।
    যেমন আসে আমাদের দেহের পরিবর্তন তেমনি আসে আমাদের সম্পর্কের পরিবর্তন সময়ের সাথে সাথে। নিত্য পরিবর্তনের সাথে সবাইকেই খাপ খাইয়ে নিতে হচ্ছে।সেটা মেনে নিয়েই এগোতে হবে।আজ কেউ তোমাকে ভালবাসছে বলে কালকেও যে একইভাবে ভালবাসবে তা নাও হতে পারে। সময়ের সাথে সাথে তাকেও তো পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে হচ্ছে।সেই পরিবেশ তাকে কতটা তোমার জন্যে সমর্থন করছে সেটাও বুঝতে হবে বৈকি। আর তাকে মেনেও নিতে হবে। যত মানতে পারবে ততই শান্তি আসবে জীবনে। কখনো ভাববে না কি হতে পারত আর কি হলনা।ভাববে যা পেয়েছি সেটাই ভালো আমার জন্যে।
    এভাবেই প্রতিটি সম্পর্কের ওঠাপড়ার সাথে মানিয়ে নিতে হয়।যে অবস্থাই আসুক তাকে মেনে নেবে ইশ্বরের বরদান হিসেবে।ইশ্বরের থেকে শুধু ভালোটাই নেবে আর মন্দটা নেবে না তা কি হয়?দুইই নিতে হয় ইশ্বরের উপহার হিসেবে।তবেই তো শান্ত হতে পারবে আর শান্ত হলেই তো জীবনে শান্তি পাবে।আর তুমি নিজে শান্তি পেলেই তো আশেপাশের মানুষকেও দিতে পারবে শান্তির পরশ।