মন ও মুখ - তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
আমাদের সমাজে মন আর মুখের সংঘাত বেশিরভাগের মধ্যেই দেখা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখি - যে বলে - অত্যাচার করা খারাপ সেই করে বেশী অত্যাচার। যে বলে - মানুষের ভালো করা উচিত সেই মানুষের ক্ষতি করে বেশী। যে সবার সামনে চোখের জলে ভেসে বলে - আমার গুরু আমার ভগবান সেই হয় সবচেয়ে বড় গুরুদ্রোহী।
আমার মনে হয় - যে মানুষের মধ্যে যথার্থ জ্ঞান আছে যে কি করা উচিত ও কি উচিত নয় এবং যে একইসাথে জ্ঞানকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগায় তার থেকেই এমন ব্যবহার পাওয়া যায়। এই স্ববিরোধী চরিত্রদের মূল বৈশিষ্ট হল - এরা ভীষণ মিথ্যা কথা বলে। জ্ঞান থাকার জন্যে যেকোনো মানুষকে এরা বোকা বানাতে পারে ও ঠকাতে পারে। তাই বহিরঙ্গ দেখে কাউকে বিচার করতে নেই। তবে তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলে এদের চেনার একটা উপায় আছে - এদের মধ্যে নিজেকে উত্তম রূপে দেখানোর একটা প্রবণতা থাকে আর সেজন্যে যারা বরেন্য তাদের নিন্দা করতে এরা পিছপা হয় না। আধ্যাত্মিক জগতেও এমন ব্যক্তি বড় কম নেই। তবে এদের থেকে সাবধান থাকা ভালো। কারণ যারা সৎ নয় তাদের মধ্যে শয়তান বিরাজ করে আর শয়তানকে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। তাতে শয়তানের প্রভাবে পড়তে হয় না।
মন ও মুখ যাদের এক তারাই পৃথিবীতে কোনো ভালো কাজ করে যেতে পারেন। কারণ মনের সাথে মুখের সেতুবন্ধ করে বিবেক। আর যেখানে মন আর মুখের সেতুবন্ধ করে বিবেক সেখানে মিথ্যের কোনো স্থান থাকে না আর যেখানে মিথ্যার প্রবেশ নিষেধ সেখানেই পাওয়া যায় সত্যিকারের মানুষকে। কিন্তু যেখানে মন আর মুখের মাঝে বিবেকের সেতুবন্ধ নেই,যে এক বলে আর অন্য কাজ করে সেই ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলা সর্বতোভাবে প্রয়োজন। তবে সেক্ষেত্রেও পাপকে ঘৃণা করবেন,পাপীকে নয়। তাকে শোধরানোর উপায় থাকলে শোধরাবেন। আর সে শোধরানোর মত না হলে তাকে নিজের মত থাকতে দিন। সময় যখন অভিজ্ঞতা দিয়ে বোঝাবে তখন সে বুঝবে। তাই সময়ের হাতে তাকে সপে দিয়ে নিজেকে নিস্পৃহ রাখাই ভাল। কারণ সময়ের আগে কেউ তো শোধরায় না। সময় না হলে কি বেড়াল ছানার চোখ ফোটে? চোখ যতক্ষণ না ফুটবে ততক্ষণ সে জানবে কিভাবে আলো কি?
ভালো থাকবেন সবাই। জয় গোপাল।
- ইতি তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায়।