Ami Tarashis Bolchi

Ami Tarashis Bolchi
The blog of Tarashis Gangopadhyay (click the photo to reach our website)

Saturday 26 September 2015

শরণাগতি

                                          শরণাগতি 

                                                      - তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় 

    গীতায় ভগবান  শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন - 'সর্বধর্মান পরিত্যাজ্য মামেকং শরণং ব্রজ'। অর্থাত সব ধর্ম ত্যাগ করে আমার ভজনা কর। যুদ্ধের আগে অর্জুনের মনে ভয় ছিল যে যুদ্ধ করলে আত্মীয় বধের পাপ স্পর্শ করবে।  তাই ভগবান তাকে বলেন - 'ধর্মাধর্ম নিয়ে তুমি ভাবছ কেন? কার কি ধর্ম সেসব নিরুপনের ভার আমার উপর ছেড়ে দাও,আমার শরণ নাও। আর তারপর নিশ্চিন্তে যুদ্ধ কর। কারণ যুদ্ধ ক্ষত্রিয়ের ধর্ম। এটাই হল যথার্থ রণাগতি। সকাল ধর্মাধর্ম ঠাকুরের পায়ে সঁপে দিয়ে শরণাগত হওয়া আর তারপর নিজের কাজ করে যাওয়া। তবেই তো ঠাকুর এসে ধরবেন জীবনরথের রাশ। 
   প্রশ্ন উঠতে পারে - এই শরনাগতির  বৈশিষ্ট কি? এবার সেই আলোচনায় আসা যাক। 
  শরনাগতির প্রথম বৈশিষ্ট হলো  মনে নিশ্চিন্তভাব আনা।  ভক্ত যখন তাঁর সমস্ত কিছুর সাথে নিজেকেও ঠাকুরের পায়ে সমর্পণ করেন তখন তাঁর মনে নিজের জাগতিক বা পারলৌকিক কল্যানের চিন্তাও আসে না। তিনি ভাবেন না - কি খাব, কোথায় থাকব,কিভাবে আমার দিন কাটবে? যতক্ষণ না নিজের আমিত্বের ভাব কাটছে ততক্ষণ এই অবস্থা আসেনা। তাই ভক্তের চেষ্টা করতে হয় - মন,বুদ্ধি,ইন্দ্রিয় বা দেহ এসবে যেন 'আমার'ভাব ঢুকতে না পারে। আর তাকে ভাবতে হবে - যে আমি আসল আমি নই সেই আমিকে নিয়ে কেন ভাবব? ঠাকুর নিজেই তো বলেছেন গীতায়  ' মা শুচঃ',
অর্থাত চিন্তা কোর না। তাই চিন্তা করা মানে শরনাগতির অপমান। ভক্তকে ভাবতে হবে - আমার সবকিছুই ঠাকুরের আর আমিও তাঁর। তাই আমার কোন চিন্তা থাকতে পারে না। যে ভক্ত শরণাগতি নিয়েও চিন্তা করে ঠাকুর তাঁর তল্পি বইতে আসেন না কিন্তু যে শরণাগত ভক্ত নিজের সবকিছু ঠাকুরকে সমর্পণ করে নিষ্কাম হয়ে কর্ম করেন ঠাকুর একমাত্র তাঁর পাশেই এসে দাঁড়ান পরমানন্দে। 
                                                                             (ক্রমশঃ)

     

Saturday 5 September 2015

জন্মাষ্টমীর উপহার

                     জন্মাষ্টমীর উপহার

                                  - তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় 

আজ জন্মাষ্টমী। আমাদের প্রিয়তম গোপালসোনার জন্মদিন। আজকের দিনে আমরা গোপালকে কি উপহার দিতে পারি বল তো? বাঁশী হল তার সবচেয়ে প্রিয়। কিন্তু কাঠের বাঁশী নয় - আমাদের নিজেদের বাঁশীতে পরিণত করে তাঁকে উত্সর্গ করতে হবে। ভেবে দেখ - বাঁশী থাকে একদম সোজা -তার ভিতরে কোন বাঁকা বাঁক থাকে না। অর্থাত আমাদের নিজের মনটিকে ঠিক এরকম সোজা সরল করে তুলতে হবে। বাঁশীর ভিতরটি থাকে ফাঁপা - অর্থাত তার ভিতরে থাকে না কোন কামনা। এইসাথে বাঁশীর থাকে আটটি ছিদ্র - আমাদেরও দেহে রয়েছে এমনি আটটি ছিদ্র -বাইরের দিকে পঞ্চ ইন্দ্রিয় এবং ভিতরের দিকে মন,বুদ্ধি ও অহংকার। এই সব কিছু গোপালকে নিবেদন করে শুধু শরণাগত হতে হবে - তবেই আমরা তার কৃপা অনুভব করতে পারব আমাদের সবকিছুর মাঝে।তখনি তিনি আমাদের মধ্যে সুর ভরে দেবেন আর সেই বাঁশুরিয়া তখন বাজাবেন আমাদের যথার্থ বাঁশী বানিয়ে। সেই যে আমাদের আসল লক্ষ্য -তাঁর কৃপা আস্বাদ। জয়  গোপালসোনা।