সাধনপথে চলতে হলে
আমার কাছে এসে অনেকেই দীক্ষা চায়।কিন্তু আমি তাদের বলি - সাধনপথে চলতে হলে প্রথমেই দীক্ষা হবে না। আগে দীক্ষার জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। নিজেকে তৃনাদপি ক্ষুদ্র মনে করতে হবে। মনকে ইচ্ছাশুন্য করতে হবে এবং অহংকার হবে। মনে কোনকিছু নিয়ে তামাশা বা অলৌকিকের magic দেখার বাসনা থেকে নিবৃত্ত করতে হবে। সেইসাথে শাস্ত্রপাঠ ,সত গ্রন্থ পাঠ , সত্সংগ করে যেতে হবে যত সম্ভব। ধরা যাক - মনে কোন কিছুর উপর লোভ এলো। হয়ত ইচ্ছা জাগলো - এখন কিছু রসনার তৃপ্তির জন্যে খেতে হবে। তখনই চেষ্টা করবে লোভ সামলানোর।খাও পরিমিত। কথা বল কম। যেটুকু বল সত্যি বল। মনে কিছু নিয়ে জল্পনা কল্পনা কোর না। আর কখনই মনে করবে না তোমার কিছু দরকার কারণ তোমার যা দরকার তা তোমার চেয়ে বেশি ভালো জানেন ঠাকুর। তিনিই ব্যবস্থা করবেন।
এই জায়গা গুলো আয়ত্ত করার জন্যে নাম জপ খুব কাজে দেয়। তাই আমি তাদের বলি -রাতে নির্জন ঘরে বা ঘরের নিরালা কোণে নিজের পছন্দের ইষ্টনাম অন্তত এক বছর জপ কর। সেইসাথে রাত চারটায় উঠে পারলে স্নান করে আর নাহলে শয্যাশুদ্ধি করে অন্তত এক বছর জপ কর। যখন এভাবে জপ করতে করতে মন স্থির হয়ে আসবে তখন শ্বাস কুম্ভক করে চোখ বন্ধ রেখে ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করে তার মাঝে মন নিবিষ্ট করে জপ কর। তারপর শুধু তাঁর শ্রীচরণ দেখে মন্ত্র জপ কর। তাতেই সব হবে। মাঝে মাঝে নিস্তব্ধ রাতে জপের পর ভ্রামরী প্রাণায়াম করে কানে আঙ্গুল দিয়ে শুনতে পারো - তাতে ঝিল্লি,বাঁশী ,মেঘগর্জন,ঘন্টা,কাঁসা,ভেরী,তুরী এরকম নাদ শুনতে পাবে। তারপর বীজমন্ত্র পেলে সহজেই কাজ দেবে।সেইসময়ে শুধু চেষ্টা করতে হবে মন যাতে আজ্ঞাচক্রে বা তার উপরে থাকে। এভাবে যোগে বসে জিভকে তালু মূলে রেখে বীজমন্ত্র জপ করলে প্রথমে শোনা যাবে প্রণব ধ্বনি আর তাতে মন নিবিষ্ট করতে পারলেই আসবে সমাধী।
No comments:
Post a Comment