Ami Tarashis Bolchi

Ami Tarashis Bolchi
The blog of Tarashis Gangopadhyay (click the photo to reach our website)

Sunday 2 June 2013

হাসি তবু হাসি নয় - এক

                    হাসি তবু হাসি নয় 

                     ।।এক।।
 একটি মেয়ের আমার সাথে সম্বন্ধ এসেছিল ২০০৩-২০০৪ নাগাদ। নামটি ইচ্ছে করেই বলছিনা।কারণ মেয়েটি খুব ভালো। তার সাথে ছকে যে আমার মেলেনি এমন নয়। কিন্তু সেই মেয়েটির বাবার সাথে যার সুত্রে আমাদের আলাপ হয় সেই প্রতুলদার জন্যেই আমি রাজি হতে পারিনি। আমার " জীবন থেকে মহাজীবনের পথে" যাঁরা পড়ছেন তাঁরা অচিরেই জানতে পারবেন যে আশালতা সাধুখা নামের একজনের সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন এবং আমাদের প্রতি অজস্র তান্ত্রিকক্রিয়া তিনি করেছিলেন। এমনকি ২০০৪ সালে প্রতুলদা নতুন করে আসতে শুরু করার পর একদিন আমাদের বুকশেলফে একটি দাঁত পোয়া যায়। সেটি দেখেই বাবা বলেন এটা তান্ত্রিক ক্রিয়ার ব্যাপার।তারপর আমি ওটা আগুনে ফেলে দিয়ে একটু পুড়িয়ে বাইরে ফেলে দি।সেদিনই প্রতুলদার ছেলের মোবাইল চুরি যায় এবং কিসব আরো ঝামেলা ঘটে।যেহেতু প্রতুলদার source  থেকে মেয়েটি এসেছিল তাই আমি মেয়েটি ভালো জেনেও বিয়ে করতে রাজি হইনি কারণ হয়ত পরে ওর  অজান্তেই ওকে দিয়ে তেমন কিছু তিনি করাতে পারতেন। 
     মনে আছে - যখন আমার সম্বন্ধ আসে তখন  একদিন মেয়েটির আরেক পরিচিত মল্লিকদা বলছিলেন সে নাকি আমার দেবলোকের অমৃতসন্ধানে পড়ে আমার উপর খুব সন্দেহপ্রবণ হয়ে পড়েছিল।মল্লিকদার কাছে বলেছিল অনেক ভেবে - ওর সাথে বিয়ে হওয়ার পর ঝিলিক আর মৈত্রেয়ী আমাকে যদি না ছাড়ে তবে ওর কি হবে? ওর  বাড়ি থেকেও খুব ইচ্ছে ছিল আমার সাথে বিয়ে দেয়ার। কিন্তু প্রতুলদার জন্যে যেহেতু তাতে আমি রাজি হইনি তাই মেয়েটি এরপর আমার উপর খুব রেগে যায়। ওর রাগটাও স্বাভাবিক। কারণ প্রতুলদার কারণ ওকে বলা যায়নি। তবে যেটা অস্বাভাবিক সেটা হলো - ওই না করাটা সে এখনো ভুলতে পারেনি।তারপর থেকে যখনই ওর  ভালো কিছু হয়েছে তখনি ওর বরকে নিয়ে,ওর  ছেলেদের নিয়ে কোনো অনুষ্ঠানে একবার করে এসেছে  আমাদের আশ্রমে এবং বারবার আমাকে দেখিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যে ও বেশ ভালো আছে। ওর মনস্তত্ব বুঝি আমি। তাই কখনো কোনো কিছু বলিনা। 
      কালকের অধিবেশনেও পরে বাবার কাছে শুনলাম ও এসেছিল।এমনিতে আমি কাল  বক্তৃতা দেয়ার সময়ে অবশ্য খেয়াল করিনি কিন্তু যে বিষয়ে বক্তৃতা দিছিলাম তাতে যম,নিয়ম প্রসঙ্গে বলছিলাম। সেখানেই কথাপ্রসঙ্গে বলেছিলাম - আমরা যে যা পেয়েছি তা নিয়েই খুশি থাকা ভালো।কে কি পেল,কে কি পেলনা এ নিয়ে মনকে ভাবানো  ভুল। কারণ এসেছি সামান্য কিছুদিনের জন্যে,চলেও যাব কিছুদিন পরে।তাই রাগ বা ঈর্ষা বা প্রতিহিংসা মনে রেখে কেন নিজেদের মনকে কষ্ট দেব। এটা কিন্তু কথাপ্রসঙ্গেই বলেছিলাম।
      রাতে ঘরে আসার পর বাবা যখন বলছিলেন যে ও এসেছিল তখন মা বললেন যে ও নাকি মাকে বলেছে যে আজকের অনুষ্ঠানে সবার বক্তৃতা আর গান নাকি খুব ভালো হয়েছে। শুনে ওর মন নাকি ভরে গেছে। যদিও আমি ওকে দেখিনি তবু আমার বক্তব্য  বুঝে ও যাতে শান্তি পায় সেটাই কামনা করি। কারণ আমরা কেউ যখনি কারোর উপর রেগে থাকি তখন অন্য প্রকারে আমরা নিজেদেরই আঘাত দিয়ে থাকি। আর ও সত্যি খুব ভালো মেয়ে।তাই ৯ বছর পর অন্তত ওর এই trauma থেকে বেরিয়ে যাওয়া উচিত। সেই কামনাই করি।
    (অনেকদিন ব্লগ লেখা হচ্ছিল না বলে আজকে আমার ছোট বোন  তানিয়া একটু আগেই অনুরোধ করলো নতুন ব্লগের জন্যে। বোনের অনুরোধ তো ফেলা যায়না।অতএব লিখে ফেললাম একটি অশ্রু রাঙানো মজার অভিজ্ঞতা )

No comments:

Post a Comment