আধ্যাত্মিক জীবনে কিভাবে এগোতে হবে
আমার প্রিয় সুহৃদ অরুণাভ বাগচী একটি সুন্দর প্রশ্ন করেছিলেন - একটি মানুষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আধ্যাত্মিক জগতের যাত্রা কিভাবে হওয়া উচিত।
আমি উত্তরে বলেছিলাম - যদি শুরু থেকে বলতে বল তবে একদম শৈশব থেকেই বলি। একটি শিশু যখন একটু একটু করে বড় হচ্ছে তখন থেকেই তাকে আধ্যাত্মিক জগতে নিয়ে আসা উচিত।অবশ্য এজন্যে বাবা মায়েদেরও sacrifice প্রয়োজন। তাদের নিজেদেরও আগে আধ্যাত্মিক জগতের সাথে যুক্ত হওয়া দরকার।তবেই তো তারা পারবেন শিশুদের শেখাতে।
শিশুকে ছোটবেলায় প্রথমে আধ্যাত্মিক জগতের সম্বন্ধে আকৃষ্ট করতে হয় নানা গল্প বলে - পুরাণ,উপনিষদ ও পান্চাতন্ত্রের যে শিক্ষামূলক গল্পগুলো আছে সেগুলি তাদের বলা প্রয়োজন,বলা প্রয়োজন বিভিন্ন সাধক সাধিকাদের লীলাকথা। এতে হয়কি,তারা আধ্যাত্মিক জগতের উপর আকৃষ্ট হয়। সেইসাথে তাদের মধ্যে যাতে নীতিবোধ জেগে ওঠে সেটাও দেখতে হয়। এজন্যে বাবা মাকেও আদর্শের পথে এগোতে হয়। তাদের দেখেই তো সন্তান শিখবে।
এরপর একটু পড়তে শিখলে রামায়ণ,মহাভারত হাতে ধরিয়ে দেয়া উচিত যাতে শ্রীরাম ও স্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধে ভক্তি জাগে। আস্তে আস্তে ঠাকুরের সামনে বসিয়ে দেয়া উচিত যাতে তারা ঠাকুরের পূজা করে আগ্রহী হয়।আরেকটু বড় হলে হাতে ধরিয়ে দাও গীতা আর বল - দুএক পাতা সংস্কৃত ও তার অনুবাদ ঠাকুরের সামনে পড়ে যেতে। এতে হবে কি,গীতার শব্দব্রহ্ম শিশুর মধ্যে কাজ করতে শুরু করবে। প্রথমে সে কিছুই বুঝবেনা।বোঝার দরকার নেই।কিন্তু শব্দব্রহ্মের অনুরণন তার মধ্যে ঠিক কাজ করে তার ভিত গড়ে দেবে।এভাবেই ঠাকুরের সামনে তাকে বড় করতে থাক।এভাবে এগোলে ছেলেমেয়ে কখনো বিপথে যাবেনা।
তারপর একটু বড় হলে তাকে নামজপ শেখাও।বাবা মায়ের চেয়ে বড় গুরু তো কেউ হয়না।তাই সন্তানের পছন্দমত নাম ধরে তাদের জপ দেখিয়ে দাও। এই নাম জপ তার অনেক প্রারব্ধ কাটিয়ে প্রস্তুত করে দেবে মন্ত্রদিক্ষার জন্যে। আর তারপর সময় হলেই গুরু আসবেন তার জীবনে। তারপর তার আধার অনুযায়ী তাকে ভক্তি,জ্ঞান বা যোগের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এভাবেই আধ্যাত্মিক পথে এগোতে হয়। এটাই তোমার ভাষায় প্রথম শ্রেণী থেকে মাস্টার ডিগ্রী নেয়ার পথ।
আর এই যে পথের কথা বললাম - এটা একদম পরীক্ষিত পথ। এটা আমার ব্যক্তিগত জীবন থেকে পাওয়া শিক্ষা।
No comments:
Post a Comment