প্রাণায়াম
পাশ্চাত্যে বলা হয় - মন আর দেহ প্রত্যক্ষভাবে একে অপরের সাথে যুক্ত। মন খারাপ হলে তার প্রভাব পড়ে দেহে আর দেহ খারাপ হলে তার প্রভাব পড়ে মনে। পাশ্চাত্যে এই মন বলতে বোঝানো হয় নিম্নস্তরের মন বা LOWER MIND,অর্থাৎ যা চিন্তা,আবেগ এবং কল্পনার স্তরে পড়ে।কিন্তু ভারতবর্ষে বলা হয় - দেহ মনের সাথে পরোক্ষভাবে যুক্ত। প্রাণের সেতু বেঁধে রাখে মন আর দেহকে। দেহকে যদি শান্ত ধীরস্থিরভাবে বসানো যায় তবে প্রাণও তার সাথে সামঞ্জস্য রাখতে পারবে। আর প্রাণ সেই জায়গায় এলে মনকেও ধীরে ধীরে সেই শান্ত অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব। আর তাই যৌগিক উপায়ে প্রাণায়ামের উদ্ভব।
এই প্রাণ কিন্তু শ্বাস নয়। শ্বাস হলো দেহের ক্রিয়াকর্মকে সচল রাখার মুখ্য শক্তি। এই শক্তির মাধ্যমেই গতিশীল হয় মন।তাই এই শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই মনকেও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।তাই প্রথমে প্রাণকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় আর এই প্রাণ শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় প্রাণায়ামের মাধ্যমে। তাহলে আপনা থেকেই মনের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
আমাদের উদ্দেশ্য থাকে শরীরের ভিতর থেকে তমগুণ আর রজগুণকে বের করে দিয়ে তার মধ্যে সত্বগুণের প্রকাশ ঘটানো।প্রাণায়াম আমাদের সেদিকেই এগিয়ে নিয়ে যায়। ফলে দেহের ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেমন অনাবিল হয়ে ওঠে তেমনি মন হয়ে ওঠে বিশুদ্ধ। আমাদের মন জাগতিক জগতের প্রভাবে আচ্ছন্ন থাকার ফলে যে সত্বগুণকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেনা এবং নিজেকে উত্তরোত্তর অসুস্থ করে তোলে তার থেকে আমাদের একমাত্র বাঁচাতে পারে প্রাণায়াম। এই প্রাণায়ামের মাধ্যমে প্রাণ প্রথমে মনকে স্থির করে দেয়,তারপর মনকে বিশুদ্ধ করে তোলে শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। ধীরে ধীরে মনের মধ্যে যে তমগুণ ও রজগুণ আগে সত্বগুণকে ভিতরে প্রবেশ করতে দিত না তার শক্তি নাশ হয়ে যায় এবং মন হয়ে ওঠে সাত্ত্বিক। একমাত্র এই অবস্থাতেই সাধনপথে এগোনো সম্ভব হয়।
অতীতে আমাদের আশ্রমের আধ্যাত্মিক অধিবেশনে আমি এই প্রাণায়াম অনেক করিয়েছি।তাও ভক্ত মানুষদের জন্যে,যারা সেই অধিবেশনে যোগ দিতে পারেননি,তাদের জন্যে সেই প্রাণায়ামের ভিডিও আবার দিলাম।এই প্রাণায়াম নিয়মিত করে জপতপে বসলে অবশ্যই সফল হবেন।
No comments:
Post a Comment