Ami Tarashis Bolchi

Ami Tarashis Bolchi
The blog of Tarashis Gangopadhyay (click the photo to reach our website)

Sunday 21 April 2013

বারো - জপ

                                     জপ 

আমাদের জীবনে জপের কোনো বিকল্প নেই। সাধনপথে এগোতে হলে জপের প্রয়োজন অনঃস্বীকার্য। এই জপ হয় তিন প্রকারের - উচ্চস্বরে জপ,উপাংশু জপ ও মানস জপ। 
এর মধ্যে প্রথমটি হলো জপের মধ্যে সবচেয়ে নীচের স্তর। বীজমন্ত্র জপের ক্ষেত্রে এটা চলে না।শুধু নামজপে চলতে পারে। একদম প্রাথমিক স্তরের নামজপের ক্ষেত্রে এই উচ্চৈস্বরে জপ করতে দেয়া হয়। অর্থাৎ এটি হল একদম শুরুর স্তর।
দ্বিতীয় জপ অর্থাৎ উপাংশু জপ হল যেখানে জিভ ও ঠোঁট নড়বে মন্ত্র উচ্চারণের সাথে সাথে কিন্তু আওয়াজ হবেনা,অর্থাত নীরবে জপ চলবে মনে মনে। যারা প্রথম বীজমন্ত্র পেয়েছে তাদের এই উপাংশু জপের কথা বলা হয়।এতে বীজমন্ত্র শব্দের সাথে উচ্চারণ হয়না কিন্তু মনে মনে এবং জিভের মাধ্যমে চলতে থাকে। আসলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জপ করতে হয় একটা সংখ্যা মেনে যেমন ১০৮,১০০৮ বা ১০,০০৮। সেইসেইএইএকটা নির্দিষ্ট সংখ্যা ধরে জপ করার প্রয়োজন হয় শুরুর দিকে।তাই সে সময়ে উপাংশু জপ আদর্শ।এতে মন স্থির হয়ে যায় একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জপ করার জন্যে।
তবে শ্রেষ্ঠ জপ হলো মানস জপ যাকে বলে অজপা।শ্বাস প্রশ্বাসে এই জপ করতে হয়।শ্বাসের সাথে একবার,প্রশ্বাসের সাথে একবার। তাতেই হয়।যতক্ষণ ইচ্ছা কর না গুণে,মালা না জপে মনে মনে এই জপ করে যাব যায়।উপাংশু জপে যখন জপের সময়টা সম্বন্ধে মস্তিস্ক অভ্যস্ত হয়ে যায়,তখনই এই জপে আসা ভালো।এই জপে কোনো কর গোণার বা মালা জপার বা সংখ্যা গোণার প্রয়োজন থাকেনা।শুধু মনপ্রাণ দিয়ে জপ করে গেলেই হল।সব সাধাক্রাই বলেন - এটিই হলো উত্তম জপ।
নিত্য এই জপের মধ্যে থাকলে মানবের উত্তরণ হবেই।তবে জপের সময়ে "আমায় ওই কাজটা করতে হবে","ও আমাকে এরকম কেন বলল বা আমাকেও এর বদলা নিতে ওই বলতে হবে " এসব চিন্তা কোনো মনে রাখা চলবেনা।এসব চিন্তা মনে শুরুর দিকে আসবে ঠিকই। তবে সেইসময়ে ধ্যান করে এটা কমাতে হবে। মনটা তখন শুধু রাখতে হবে শ্বাস নেয়া ও শ্বাস ছাড়ার দিকে।তাতেই ধীরে ধীরে মনের চিন্তার উপর নিয়ন্ত্রণ আসবে আর তখনি শুরু করতে হবে জপ।মনকে আজ্ঞাচক্রে স্থির করে জপ করে যেতে হয়।এতেই পাওয়া যায় জপের যথাযথ ফল। তোমাদের সবার জপ এভাবে সার্থক হোক এই কামনাই করি।

No comments:

Post a Comment